ব্রেকিং নিউজ

পুলিশের জব্দ করা গাড়িই এডিস মশার উৎপাদ বাড়াচ্ছে

ভবনের সামনে বড় সাইনবোর্ডে লেখা ধানমন্ডি মডেল থানা। মূল ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই হাতের বাঁ পাশে চোখে পড়ে বেশ খানিকটা জায়গাজুড়ে আবর্জনা, জব্দ করা পুরোনো গাড়ির স্তূপ। পড়ে আছে বৈদ্যুতিক তার, মরিচা ধরা মোটরসাইকেল, পুরোনো টায়ার, ব্যক্তিগত গাড়ির ভাঙা অংশ। কাছে গিয়ে খেয়াল করলেই চোখে পড়ে এসব আবর্জনার মধ্যে জমে থাকা পানি আর মশা।

গতকাল ধানমন্ডি মডেল থানাসহ পাঁচটি থানা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে থানা প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ ছিল। থানা চত্বর মোটামুটি পরিচ্ছন্ন থাকলেও যেসব স্থানে জব্দ করা মোটরগাড়ি রাখা আছে, সেগুলো এখনো আগের মতোই রয়েছে।

সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ৩১ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট রাজধানীর ১৪টি স্থানে মশা জরিপ করেছিল। এর মধ্যে ১২টি স্থানেই এডিস মশার লার্ভা ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে আছে। এসব স্থানের মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের ২০-৬০ শতাংশ পাত্রে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছেন জরিপকারীরা।

ওই জরিপের পরপরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জ্যেষ্ঠ কীটতত্ত্ববিদ ভূপেন্দর নাগপাল ঢাকায় ৫ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুলিশের জব্দ করা গাড়িতেও পানি জমে এডিস মশা জন্ম নেয়। তিনি বলেন, মানুষ যদি মশামুক্ত করার জন্য সপ্তাহে এক ঘণ্টা করে ব্যয় করে, তা হলেই শহরকে ডেঙ্গুমুক্ত করা সম্ভব।

পুলিশ সদস্যরা বলছেন, জব্দ করা গাড়ি, গাড়ির টায়ার, হেলমেট, ডাবের খোল, পুলিশের পুরোনো জুতাসহ অব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস থানা চত্বরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে। বৃষ্টি হলেই এতে পানি জমছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে পুলিশ চত্বর ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখতে পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে তিনি পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সও করেন।

জব্দ করা মোটরযানে মশার বাসা
ধানমন্ডি, পল্টন, খিলগাঁও, মিরপুর ও শেরেবাংলা থানা ঘুরে দেখা গেছে, মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা গাড়ি রাখার জায়গায় এডিস মশা প্রজননের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে।

ধানমন্ডি মডেল থানার ভেতরেই গাড়ি রাখার স্থান। আছে ময়লা ফেলার ডাস্টবিন। পুরো ডাম্পিং স্টেশনে চারটি ব্যক্তিগত গাড়ি, তিনটি সিএনজি আর অর্ধশতাধিক পুরোনো মোটরসাইকেল রাখা। বৈদ্যুতিক তারসহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে আবর্জনা। মোটরসাইকেলের ভাঙা তেলের ট্যাংক, ব্যক্তিগত গাড়ি ও সিএনজির পাদানিতে জমে আছে বৃষ্টির পানি।

অবশ্য থানার পরিদর্শক (অভিযান) আশফাক রাজীব দাবি করলেন, নিয়মিত এসব জায়গা পরিষ্কার করা হয়। 

একই চিত্র দেখা যায় পল্টন মডেল থানার গাড়ি রাখার স্থানেও। কাচ ভেঙে যাওয়া গাড়িগুলোর ভেতরে পানি জমে আছে, অনেক গাড়ি ও ট্রাকের ভেতর জন্মেছে গাছ। ফেলে রাখা জুতা, হেলমেট ও ডাবের খোসার ভেতরেও জমে থাকা পানিতে মশা বাসা বেঁধেছে।

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক প্রকাশনা সমূহ

   সাম্প্রতিক খবর



»